সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া ক্যানেলপাড় এলাকায় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ অনুমোদনহীন অবৈধ কারখানায় তৈরী হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতিকর ভেজাল জুসসহ শিশু খাদ্য। মহিউদ্দিন প্রধান নামে এক ব্যক্তি প্রধান কনজুমার প্রোডাক্টস নামে একটি অবৈধ কারখানা গড়ে তুলে ম্যাংগো ড্রিংকস নামক এই জুসসহ বিভিন্ন শিশু খাদ্য তৈরী ও বাজারজাত করছে। সরকারী খাদ্য নীতিমালা অমান্য করে বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়াই এই ভেজাল জুস তৈরী ও বাজারজাত করে জনজীবন বিপন্ন করছে কারখানা মালিক। রহস্যজনক কারনে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই কারখানা ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার পাড়া মহল্লার দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে ম্যাংগো ড্রিংকস নামক জুস। এই জুস পান করার মত নয়। না বুঝে শিশুরা এই জুস পান করলেও প্রাপ্ত বয়স্করা পান করলে সহজেই বুঝা এই জুস স্বাস্থ্য সম্মত নয়। নামে ম্যাংগো ড্রিংকস হলেও মূলত এই জুস তৈরী করা হচ্ছে রং ও কেমিক্যাল জাতীয় বিভিন্ন উপাদান দিয়ে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অবিকল ফ্রুটিকা জুসের বোতলের ন্যায় বাজারজাত করা হচ্ছে এই ভেজাল ম্যাংগো জুস। যার আড়াইশ মিলি ওজনের এক বোতল জুসের দাম নির্ধারন করা হয়েছে ২২ টাকা।
জানা গেছে, মিজমিজি বাতানপাড়া ক্যানেলপাড় এলাকায় মহিউদ্দিন প্রধান নামে এক ব্যক্তি প্রধান কনজুমার প্রোডাক্টস নামক একটি কারখানা গড়ে তুলে ম্যাংগো ড্রিংকস জুসসহ বিভিন্ন ধরনের শিশু খাদ্য তৈরী ও বাজারজাত করছেন। এই কারখানার সরকারী কোন অনুমোদন নেই। তৈরীকৃত খাদ্য সামগ্রীর নেই বিএসটিআই’র অনুমোদন। নিজের মনগড়া মতে এসব শিশু খাদ্য তৈরী করে বাজারজাত করছে কারখানা মালিক। কারখানা মালিক মহিউদ্দিন প্রধান চাঁদপুর জেলার বাসিন্ধা।
তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় তার বিভিন্ন প্রভাবশালী লোকদের সাথে উঠবস রয়েছে তার।স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এই মহিউদ্দিন অখাদ্য-কুখাদ্য তৈরী করে জনজীবন বিপন্ন করছে। শিশু খাদ্যের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমান অর্থ। খাওয়ার অযোগ্য জুস কিনে প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে চিটাগাং রোডের ফজর আলী গার্ডেন সিটিতে একটি অনুষ্ঠানে অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য কয়েক শতাধিক বোতল ম্যাংগো ড্রিংকস জুস পরিবেশন করা হয়েছিল। কোন অতিথিই তখন এই জুস পান করতে পারেননি। তখন এই জুসের মান নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই জুস শিশুরা কিভাবে পান করে সেই প্রশ্ন তুলে অতিথিরা। সে দিন ওই অনুষ্ঠানে ম্যাংগো ড্রিংকস জুস তৈরীর কারখানার মালিক মহিউদ্দিন প্রধান নিজেও উপস্থিত ছিলেন। সে সময় অনুষ্ঠানের আয়োজকরা মহিউদ্দিন প্রধানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজে নিজেও স্বীকার করেন এই জুস পান করার অযোগ্য। কি কারনে জুসের মান এত খারাপ হলো তা তিনি নিজেও হতভম্ব হয়ে যান। লজ্জিত হয়ে তখন মহিউদ্দিন সকল জুস ফেরত নিয়ে যান। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা মহিউদ্দিনের পরিচিত ও ঘনিষ্ট লোক হওয়ায় তিনি পার পেয়ে যান।
সূত্রটি জানায়, ওই অনুষ্ঠানে লজ্জিত হলেও মহিউদ্দিন খাওয়ার অযোগ্য জুস তৈরী ও বাজারজাত করা অব্যাহত রেখেছে। কারন হিসেবে সূত্রটি মনে করছেন, বয়স্করা জুসের গুনগত মান বুঝতে পাড়লেও শিশুরা তা না বুঝেই পান করে বিধায় কারখানা মালিক তার এ অবৈধ ও প্রতরনা মূলক ব্যবসাটি অব্যাহত রেখেছেন।
তাই এই কারখানায় তৈরী সকল খাদ্যের গুনগত মান ও স্বাস্থ্য সম্মত কিনা তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগহত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।